কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়া থেকে নিখোঁজের ১৮ দিন পর আরও এক ইজি বাইক চালকের গলিত দেহাবশেষ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৫টায় চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ঘোড়ামারা ব্রিজের সংলগ্ন জঙ্গলের মধ্য হতে বস্তাবন্দী সবুজ মন্ডল (৩০)নামের ইজি অটো চালকের লাশ উদ্ধার করে কুষ্টিয়া পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ ও মিরপুর থানা পুলিশের যৌথ দল।
নিহত ইজিবাইক চালক সবুজ মন্ডল কুষ্টিয়া শহরতলীর বাড়াদী এলাকার মুখার্জী সড়কের বাসিন্দা বাচ্চু মন্ডলের ছেলে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কুষ্টিয়া মিরপুর থানার আকরাম খাঁ নামের অটোচালককে অপহরণ ও হত্যার অভিযোগের করা মামলা নং ১৯, তারিখ ১২/০৭/২০২৩ ইং এর আসামী কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বারখাদা ত্রিমোহিনীর বাসিন্দা নজরুল ইসলামের ছেলে জনি (২৮) এবং কানাবিল গ্রামের বাসিন্দা শফিকুলের ছেলে তুষার (২১) কে গ্রেফতার করে ব্যাপক ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। একপর্যায়ে তারা কুষ্টিয়া থেকে নিখোঁজ হওয়া বেশ কয়েকজন ইজি বাইক চালকের অপহরণ ও অটো ছিনতায়ের কথা স্বীকার করে। তারই এক পর্যায়ে আসামীদ্বয়ের দেখিয়ে দেয়া মতে গত ২৪ আগষ্ট বিকেলে কুষ্টিয়া শহরের মজমপুর এলাকার জনৈক মোজাফ্ফ হোসেনের চৌহদ্দি ঘেরা বাগান থেকে সদর উপজেলার ইজি বাইক চালক হিরু (৩৪) নিখোঁজের ২২দিন পর গলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। একই ভাবে গত ১৯ আগষ্ট নিখোঁজ সবুজ মন্ডলের লাশ গ্রেফতার দুই আসামীর দেখিয়ে দেয়া স্থান থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। এভাবে কুষ্টিয়া মডেল থানা, মিরপুর, ভেড়ামারা ও দৌলতপুর থানায় বেশ কিছু সংখ্যক অটো ও ভ্যান চালক নিখোঁজের অভিযোগ এনে সাধারণ ডায়েরী করেছে নিখোঁজ ব্যক্তিদের পরিবার। তাদের জীবিত বা মৃত কোন সন্ধান এখনও পর্যন্ত বের করতে পারেনি পুলিশ ও পরিবার।
এমামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ পুলিশ পরিদর্শক সুফল সরকার জানান, ‘গত ১৯ আগস্ট কুষ্টিয়ার চৌড়হাস মোড় থেকে যাত্রী সেজে আসামীরা অটোতে উঠে কুষ্টিয়ার রেনউইক বাঁধে নিয়ে যায় সবুজকে। সেখানেই তার সবুজকে শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে লাশ টি বস্তাবন্দী করে একটি অ্যাম্বুলেন্স এর মাধ্যমে চুয়াডাঙ্গা ফাস্ট ক্যাপিটাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের সম্মুখস্থ সড়কের পাশে ঝোপের মধ্যে ফেলে দেয়। লাশ উদ্ধারের পর নিহত অটো-চালক সবুজের পরিবারের লোকজন তার লুঙ্গি ও গেঞ্জি দেখে লাশ সনাক্ত করে। এ ঘটনায় লাশ গুমের সহযোগিতায় জড়িত সন্দেহে এম্বুলেন্স ড্রাইভার মিরপুর উপজেলার চারুলিয়া গ্রামের সরোয়ার প্রামানিকের ছেলে বাচ্চু প্রামানিক (২৬) কেউ গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত ১৯ আগষ্ট সকালে সবুজ অন্যান্য দিনের মতো অটো নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর বাড়ি ফিরে আসেনি। ঘটনার পরদিন ২০আগষ্ট সবুজ নিখোঁজের বিষয় উল্লেখ করে কুষ্টিয়া মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরী করে নিখোঁজ সবুজের মা রেহানা আক্তার। যার জিডি নং- ১৫৩৭, তারিখ- ২০/৮/২০২৩। ওই সাধারণ ডায়েরীর সূত্র ধরে পুলিশের অভিযানের পর সবুজের লাশ চুয়াডাঙ্গা থেকে উদ্ধার করা হয়।
কুষ্টিয়া পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পলাশ কান্তি জানান,‘কুষ্টিয়া থেকে বেশ কিছুসংখ্যক ইজি বাইক চালক নিখোঁজের অভিযোগে করা সাধারণ ডায়েরির সূত্র ধরে কুষ্টিয়া পুলিশের বিভিন্ন শাখা ও র্যাব অভিযান পরিচালনা করছে। আশা করি অন্যদেরও সন্ধান বের করে ফেলবে পুলিশ’।